সপ্তাহ – ১৯

অভিনন্দন, আপনার গর্ভাবস্থার অর্ধেক সময় সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন! স্বাভাবিক ভাবেই যত সময় পার করবেন তত উত্তেজনা বৃদ্ধি পাবে। তাই নিজের যত্ন নিতে কখনো ভুলবেন না।

শিশুর আকার কি হবে?

১৯ সপ্তাহের আপনার গর্ভস্থ শিশুর আকার একটি আম বা কলার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। এই সময় সাধারণত শিশুর ওজন আনুমানিক ২৪০-২৫০ গ্রামের মত হয় এবং লম্বায় আনুমানিক ৬-৬.৫ ইঞ্চির মত হয়। গর্ভকালীন এই সময়ে শিশুর বৃদ্ধি অনেক দ্রুত হয়ে থাকে।

অন্যান্য পরিবর্তনের মধ্যে আপনার শিশুর মস্তিষ্কের নরম সংবেদনশীল অংশ, শিশুর মাথায় স্বতন্ত্র চুল এবং সবশেষে আপনার শিশুর কিডনিগুলো সম্পূর্ণরূপে কাজ করতে শুরু করে।

এ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভের ভ্রূণের প্রয়োজনীয় সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গঠিত হয়ে যায় এবং ভ্রূণটি আকারে বড় হতে থাকে। অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলোর পরিপূর্ণ বিকাশ হতে থাকে।
১৯তম সপ্তাহে এসে ভ্রূণের ছোট হাত এবং পাগুলো তার শরীরের অন্যান্য অংশের সমানুপাতিক হয়ে যায়।

গর্ভাবস্থার ১৯তম সপ্তাহ অর্থাৎ পঞ্চম মাসে দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের ষষ্ঠ সপ্তাহ হিসেবে ধরা হয়।

গর্ভধারণের ১৯তম সপ্তাহে শিশুর বৃদ্ধি

গর্ভাবস্থার ১৯তম সপ্তাহে ভ্রূণ প্রায় পুরোটা সময় ঘুমিয়ে থাকে এবং ঘুমের মধ্যেই তার বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হয়, আর ভ্রূণের পরিপক্ক হবার জন্য প্রয়োজনীয় যে শক্তি দরকার তা সঞ্চিত হতে থাকে। এসময় ভ্রূণটি সারাদিনে গড়ে প্রায় আঠারো(১৮) ঘণ্টার মত ঘুমিয়ে থাকে এবং অন্য ছয়(৬) ঘণ্টা জেগে থাকে।

চামড়ার নিচে এ সময় সাধারণ ফ্যাটের সাথে ব্রাউন ফ্যাট / ব্রাউন এডিপোস টিস্যু (Brown Adipose Tissue) জমা হতে থাকে। এই ব্রাউন ফ্যাটই মূলত শিশুর জন্মের পর শিশুটিকে উষ্ণ করে রাখে। আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকলে শরীরের এই ফ্যাট কার্যকরী হয়ে ওঠে এবং প্রয়োজনীয় তাপ উৎপন্ন করতে শুরু করে যার মাধ্যমে শিশু শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

১৯তম সপ্তাহ থেকে পরবর্তী গর্ভকালীন সময় জুড়ে ভ্রূণের শরীরে ব্রাউন ফ্যাট জমা হতে থাকে, যার ফলে ভ্রূণের ওজন খুব দ্রুত বাড়তে থাকে এবং তার শারীরিক অন্যান্য অঙ্গগুলোও পরিপূর্ণতা পেতে থাকে।

গর্ভের শিশুটির আকার ১৯ সপ্তাহে সাধারণত একটি পূর্ণাঙ্গ ডালিমের সাথে তুলনা করা যায়। এসময় ভ্রূণটি প্রায় ৬.০২ ইঞ্চি বা ১৫.৩ সেমি লম্বা এবং ওজন আনুমানিক ৮.৪৭ আউন্স বা ২৪০ গ্রামের মত হয়।

১৯তম সপ্তাহের দিকে এসে গর্ভের ভ্রূণের মধ্যে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বিকাশের বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। যেমনঃ

মস্তিষ্ক

এই সপ্তাহে ভ্রূণের মস্তিষ্কে পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের রিসেপ্টর তৈরি হতে থাকে। যার ফলে ভ্রূণটি স্বাদ গ্রহন, শব্দ শুনতে পাওয়া, গন্ধ অনুভব করা, দৃষ্টি শক্তি ও স্পর্শের মতো অনুভূতিগুলোর পূর্ণাঙ্গ বিকাশ হতে শুরু করে। তাই এখন আপনার ভ্রূণটি বাইরের বিভিন্ন শব্দ শুনতে পায় এবং তার চোখ আলোর প্রতি আরও সংবেদনশীল হতে থাকে।

চামড়ার উপরের আবরণ

১৯তম সপ্তাহ থেকে শিশুটির ত্বকের চারপাশে ভারনিক্স ক্যাসিওসা (vernix caseosa) নামক এক ধরনের চর্বিযুক্ত আবরন তৈরি হতে থাকে। এই আবরণটি ভ্রূণের নরম ত্বককে চারপাশের অ্যাম্নিওটিক ফ্লুইড থেকে সুরক্ষা করে অন্যথায় ভ্রূণের ত্বকে ভাঁজ পড়ে যেত যেমনটা হয় যখন আমাদের হাত দীর্ঘসময় পানির মধ্যে রাখলে। অ্যাম্নিওটিক ফ্লুইডের এই আবরণটি পিচ্ছিল হওয়ার কারণে প্রসবের সময় ভ্রূণটি সহজে নিচে নামতে পারে।

জন্মের সময় এই আবরণের বেশিরভাগই ঝরে পড়ে যায়, তবে কিছু কিছু সময় শিশুর জন্মের পরও এগুলো শিশুর শরীরের ভাঁজে থাকতে পারে। যা খুবই স্বাভাবিক। প্রি-ম্যাচিওর শিশুদের শরীরে জন্মের সময় এটি সাধারণত বেশি দেখা যায়।

দাঁত

আশ্চর্যজনক হলেও এ সপ্তাহ থেকেই ভ্রূণের দুধ দাঁতের পেছনে তার স্থায়ী দাঁতের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তবে জন্মের পর অন্তত ৬ মাস হওয়ার আগে সাধারণত কোন দাঁতই দেখা যায় না।

জননাঙ্গ

ভ্রূণটি ছেলে হলে তার যৌনাঙ্গ পুরোপুরি বিকশিত হয় এবং তা আলট্রাসাউন্ডে দেখা যেতে পারে। ভ্রূণটি মেয়ে হলে এসময়ের মধ্যে তার জরায়ু গঠিত হয়ে যায় এবং ডিম্বাশয়ে প্রায় ৬০ লক্ষাধিক ডিম্বাণু জমা হয়ে যায়। আলট্রাসাউন্ডে শিশুটির লিঙ্গ বোঝা যাবে কিনা তা আলট্রাসাউন্ড করার সময় ভ্রূণটির পজিশনের উপর নির্ভর করে।

ফুসফুস

ভ্রূণের ফুসফুসে এখন থেকেই ব্রংকিওলের গঠন শুরু হতে পারে। ফুসফুসের প্রধান দুটি বায়ু প্রবাহী নালী ব্রংকাই থেকে যে শাখা প্রশাখা বিস্তৃত হয় সেগুলোকেই ব্রংকিওল বলে।

এছাড়াও ১৯তম সপ্তাহ থেকে ভ্রূণের মাথায় চুল উঠা শুরু হতে পারে।

১৯ তম সপ্তাহে মায়ের শারীরিক পরিবর্তন

দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে বেশিরভাগ মায়েরাই আগের চাইতে বেশি সতেজ অনুভব করেন। তবে যেহেতু এসময় শিশুর দ্রুত বৃদ্ধির জন্য মায়ের শরীর অতিরিক্ত কাজ করতে থাকে তাই কখনো কখনো ক্লান্তি আসতে পারে।

এসময় পেটের আকার নিয়ে অনেক মায়েরাই দুশ্চিন্তায় থাকেন। পেট বেশি বড় না ছোট তা নিয়ে অনেকসময় আশপাশের কৌতূহলী লোকজনের অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য শুনে গর্ভবতী মায়েরা চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। মনে রাখবেন অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে মায়ের পেটের আকার বড় ছোট হতে পারে, যেমন- গর্ভাবস্থার আগের ওজন, কততম গর্ভাবস্থা, হরমোন এবং মায়ের পেশীর ধরণ ইত্যাদি।

সাধারণত মায়ের পেটের আকার এ সপ্তাহ থেকেই বাড়তে শুরু করতে পারে তবে অনেকের এ সময়ে এসেও পেটের আকারের উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন নাও হতে পারে। এটি খুবই স্বাভাবিক। রেগুলার চেক-আপের সময় ডাক্তার আপনার পেটের আকার পরিমাপ করতে পারে। তাই এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

১৯তম সপ্তাহে গর্ভবতী মায়ের উপসর্গ

লেগ ক্র্যাম্প বা পায়ে খিল ধরা

সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার থেকে লেগ ক্র্যাম্প শুরু হতে পারে। সময় বাড়ার সাথে সাথে যখন মায়ের পেটের আকার যত বৃদ্ধি পায়, তখন লেগ ক্র্যাম্পের তীব্রতা বাড়তে পারে। লেগ ক্র্যাম্প বা পায়ে খিল ধরা সাধারণত রাতের দিকে বেশি হয় তবে দিনের বেলাও লেগ ক্র্যাম্প হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় মায়ের জরায়ুর আকার বাড়ার কারণে এবং শরীরের স্বাভাবিক ওজন বেড়ে যাওয়ার কারনে পায়ের রক্তনালীতে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। ফলে পায়ের রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়ে যায় এবং পা থেকে হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল স্বাভাবিকের চাইতে অনেক ধীরে হয়। এ কারনে পায়ে ক্র্যাম্প হতে পারে।

বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে অথবা পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে শরীরের শিরার উপর চাপ পরে ক্র্যাম্প হতে পারে। তাই বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে না থেকে কিছুক্ষন পর পর বসে পড়ুন অথবা কাত হয়ে শুয়ে থাকুন। বসার সময় পা কিছুর উপরের দিকে তুলে রাখতে পারেন এবং তেল দিয়ে পায়ে হালকা মালিশ করে নিতে পারেন।

রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন

রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন হচ্ছে এক ধরনের তীব্র ব্যাথা যা সাধারনত খুব অল্প সময়ের জন্য হয়। এটি অনেকটা মাংশপেশীর খিঁচুনির মত মনে হতে পারে। এ ব্যাথা শরীরের দুপাশেই হতে পারে তবে সাধারণত ডান পাশে বেশী হয় যা উরু পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

যখন গর্ভবতী মায়েরা হঠাৎ করে তার অবস্থান পরিবর্তন করেন তখন সাধারণত রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন অনুভূত হতে পারে, যেমনঃ বিছানা কিংবা চেয়ার থেকে ওঠার সময়। কাশি দেয়ার সময় অথবা বিছানায় নড়াচড়া বা পাশ ফিরে শোয়ার সময়।

চিন্তার কিছু নাই, গর্ভকালীন সময়ে এই ধরণের ব্যাথা খুবই স্বাভাবিক, তবে যদি এর সাথে জ্বর, কাঁপুনি কিংবা রক্তপাতের মত অন্য কোন উপসর্গ থাকে তবে অতিসত্বর ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন অনুভব করলে বসে পড়ুন এবং একটু রিলাক্স থাকার চেষ্টা করুন। কিছুক্ষন বিশ্রাম নিলেই এর থেকে কিছুটা স্বস্তি পাবেন। যদি বসে থাকা অবস্থায় ব্যাথা বেশি হয় তবে দাঁড়িয়ে পড়ুন অথবা হাঁটা চলা করুন। অর্থাৎ আপনার পজিশন পরিবর্তন করুন।

বিছানা থেকে কিংবা বসা থেকে ওঠার সময় অবশ্যই আস্তে আস্তে উঠুন। হঠাৎ নড়াচড়ার কিংবা তাড়াহুড়ার কারণে রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন বাড়তে পারে। তাই খুব ধীরে নড়াচড়া করুন। হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় কোমর এবং হাঁটু সামান্য বাঁকিয়ে নিন এতে লিগামেন্টে চাপ কম পড়ে।

কোমর ব্যাথা

গর্ভধারণের শুরু থেকেই শরীরের কিছু হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে প্রজেস্টেরন এবং রিলাক্সিন নামক হরমোন কোমরের বিভিন্ন জয়েন্ট এবং লিগামেন্টকে নরম এবং ঢিলা করে দেয়। এর ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীর অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং জয়েন্টের ভার বহন ক্ষমতা কমে যায় কিছুটা কমে যায়। এর কারণে হাঁটাহাঁটি করার সময়, অনেকক্ষণ একটানা বসে থাকলে কিংবা হটাত করে চেয়ার থেকে ওঠার সময় বা হাত দিয়ে কোন কিছু তোলার সময় কোমর ব্যাথা অনুভূত হয়।

গর্ভবতী অবস্থায় মেরুদণ্ডের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে এবং শরীরকে অতিরিক্ত ওজন বহন করতে হয়। তাই, আপনি যখন বসে বসে কাজ করার সময় সোজা হয়ে বসে থাকার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ভাল Posture বা ভঙ্গিমা ঠিক থাকবে, যা আপনার ব্যথা উপশম করতে কাজে দেবে।

মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত ঝুঁকে থাকেন যার ফলে মেরুদণ্ডের উপর আরও চাপ পড়ে। যদিও এসময় সোজা হয়ে দাঁড়ানোটা একটু কঠিন হবে তারপরও চেষ্টা করুন যাতে দাঁড়ানোর সময় ঘাড় পেছনের দিকে থাকে। একটানা বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না। দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কিছুক্ষন পর পর বসে বিশ্রাম নিয়ে নিন।

কোষ্ঠকাঠিন্য

গর্ভাবস্থায় প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। প্রোজেস্টেরন হরমোনের কারণে গর্ভবতী মায়েদের শরীরের পেশীগুলো শিথীল হয়ে পড়ে। আর পরিপাকতন্ত্রের পেশিগুলো শিথীল হয়ে পড়ার ফলে মায়েদের খাবার হজম অনেক ধীরে হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

তাই গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মায়েদেরই আয়রন সাপ্লিমেন্ট নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এই সাপ্লিমেন্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যদি আয়রন সাপ্লিমেন্টে কোন সমস্যা হয় তবে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ঔষধের গ্রুপ পরিবর্তন করে নিতে পারেন।

আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে এ সময় প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খান, সাথে নরম সবজি, ওটস, বিভিন্ন ফল ও ফলের শাঁস খাওয়া আপনার জন্য উপকারী হবে। এতে করে মূত্রনালির সংক্রমণের কোনো ঝুঁকি থাকলে তাও অনেকটা কমে যাবে।

গর্ভাবস্থার এ সপ্তাহে করনীয়

এই সময়ের মধ্যে মায়ের শরীরের ওজন প্রায় ৮/১৪ পাউন্ড অর্থাৎ ৩ থেকে ৬ কেজির মত বাড়তে পারে। গর্ভাবস্থায় সুষম খাবার খাওয়া প্রয়োজন। তাই, কি কি খাচ্ছেন সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকুন। ভ্রূণের সঠিক বৃদ্ধি এবং স্বাভাবিক প্রসবের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য সুষম খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।

শর্করা ও চিনি জাতীয় খাবার কম খেয়ে ডাল, বাদাম, দুধ, ডিম , প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি ও পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন। ঠিক মত পুষ্টিকর খাবার না খেলে শিশুর বিকাশ ঠিকমতো হবে না, আবার অন্যদিকে গর্ভাবস্থায় ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে প্রিম্যাচিওর বাচ্চা প্রসব কিংবা অন্যান্য প্রসবকালিন জটিলতা দেখা দেয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।

গর্ভধারণের আগে যদি গর্ভবতী মায়ের বিএমআই বা বডি ম্যাস ইনডেক্স স্বাভাবিক থাকে তবে এর পরবর্তীতে প্রতি সপ্তাহে ১ পাউন্ড করে ওজন বৃদ্ধি পেলে তা স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। আবার, যদি গর্ভধারণের আগে বিএমআই কম কিংবা বেশি থাকে অথবা যদি প্রথম ট্রাইমেস্টারে মায়ের ওজন খুব বেশি বেড়ে যায় বা কমে যায় তবে তার উপর নির্ভর করে মায়ের ওজন বাড়ানো বা কম বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়। মায়ের ওজন যদি কোন সপ্তাহে অর্ধেক পাউন্ড বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তী সপ্তাহ দেড় পাউন্ড বৃদ্ধি পায় তবে সেটাও খুব স্বাভাবি।

বুক জ্বালাপোড়ার বা গ্যাস হলে ৩ বেলা ভরপেট খাবার পরিবর্তে কম কম করে বার বার খাবার খান। এভাবে কিছুটা বিরতি দিয়ে অল্প অল্প, খেলে খাবার সঠিক ভাবে হজম হয় এবং এই সমস্যা অনেকটা কমে যায়। সাধারণত খাবার ভালোভাবে হজম না হওয়ার কারনে পেট ফুলে থাকা, গ্যাসের সমস্যা কিংবা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা হয়ে থাকে। এসময় বাইরের কেনা খাবার, ভাজা পোড়া এবং অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

আপনার মন্তব্য